ক্লান্তিকর অভিজ্ঞতা
ছবি: ‘পুতুলনাচের ইতিকথা’
পরিচালনা: সুমন মুখোপাধ্যায়
অভিনয়ে: আবির চট্টোপাধ্যায়, জয়া আহসান, ধৃতিমান চট্টোপাধ্যায়, অনন্যা চট্টোপাধ্যায়, শান্তিলাল মুখোপাধ্যায়, পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়
দৈর্ঘ্য: ২ ঘণ্টা ১৬ মিনিট
WBFJA রেটিং ★★★★★☆☆☆☆☆
সুমন মুখোপাধ্যায় পরিচালিত ছবি ‘পুতুলনাচের ইতিকথা’ (Putulnacher Itikatha) ১ আগস্ট মুক্তি পেয়েছে। কেমন হলো সেই ছবি? দেখে এলেন স্বপনকুমার ঘোষ
মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের চতুর্থ উপন্যাস ‘পুতুলনাচের ইতিকথা’ অবলম্বনে এর আগেও ছবি হয়েছে। অসিত বন্দ্যোপাধ্যায় পরিচালিত সেই ছবি মুক্তি পেয়েছিল ১৯৪৯ সালে। অভিনয় করেছিলেন কালী বন্দ্যোপাধ্যায়, নীলিমা দাস ও গৌতম মুখোপাধ্যায়। মানিকবাবুর কাহিনি অবলম্বনে সর্বাধিক সংখ্যক—তিনটি—ছবি পরিচালনা করেছিলেন নব্যেন্দু চট্টোপাধ্যায়। ছবিগুলো হলো ‘আজ কাল পরশুর গল্প’, ‘সরীসৃপ’ ও ‘শিল্পী’। এছাড়া ‘দিবারাত্রির কাব্য’ ও ‘পদ্মা নদীর মাঝি’ বড়পর্দায় এনেছেন যথাক্রমে বিমল ভৌমিক ও গৌতম ঘোষ।
পশ্চিমবঙ্গের প্রত্যন্ত গ্রামীণ জীবনযাত্রাকে পটভূমি করে সুমন তাঁর ছবিতে গ্রাম্য পরিবেশ এবং চরিত্রগুলিকে প্রাধান্য দিয়েছেন। গ্রামীণ জীবনের ঐতিহ্য, বর্তমান অবস্থা ও আধুনিক ভাবনা পরিচালক তাঁর ক্যামেরার মাধ্যমে ব্যক্ত করার চেষ্টা করেছেন।
আরও পড়ুন: ‘ময়লা কাপড়টাও বদলে নিতে দিল না বুড়ো’
গ্রামে বড় হওয়া শশী (আবির) শহরে শিক্ষিত হয়ে ফিরে আসে। সে গ্রামীণ জীবনসংগ্রাম এবং জীবনধারার জটিলতা বোঝার চেষ্টা করে। একসময় বিরক্ত শশী গ্রাম ছেড়ে আবার শহরে চলে যেতে চায়। কিন্তু পারে না কুসুমের (জয়া) দুই স্বপ্নালু চোখের দিখে তাকিয়ে। তবু সে চেষ্টা চালিয়ে যায়।

শশীকে গোটা ছবিজুড়ে দেখা যায়। সে সবাইকে ধীরে-ধীরে এক নতুন জীবনে আনার চেষ্টা করে। পেশায় চিকিৎসক শশীর আধুনিক মননের সঙ্গে গ্রামীণ জীবনের সংঘাত চলতে থাকে। একইসঙ্গে সে দেখে ঐতিহ্য ও আঞ্চলিকতা কীভাবে সমাজের মানবিক আদর্শের সঙ্গে পরতে-পরতে জড়িয়ে পড়েছে।
আরও পড়ুন: ছ’মাসের শিশুর মুখটা উত্তমকুমারের
অত্যন্ত মন্থর গতিতে এগিয়েছে সুমনের ছবি। শশী এবং অন্যান্য চরিত্রেরা এসেছেন প্রয়োজনমাফিক। কিন্তু ক্যামেরা সেভাবে সচল রাখেননি পরিচালক। এটা সম্ভবত তাঁর ইচ্ছাকৃত ভাবনা। তবে সুমনের ছবিতে রাতের দৃশ্যগুলি অনবদ্য। ক্যামেরা সেখানে সবকিছুকে ছাপিয়ে কথা বলে।
শশীর চরিত্রে আবিরের ঘরানার একটা পরিচয় পাওয়া যায়। এত স্বাভাবিক চরিত্রে তাঁকে খুব কমই দেখা গিয়েছে পর্দায়। সেই সঙ্গে জয়াও কম যাননি। একটি বিশেষ চরিত্রে ধৃতিমান যথাযথ।
আরও পড়ুন: রানিকে গয়না পরিয়ে দিলেন রাজা
আবিরের বিপরীতে জয়া তাঁর স্বপ্নের চোখ দু’টি নির্মাণ করেছেন পর্দায়। কুমুদ গ্রাম্য একটি চরিত্র যে যাত্রা করে। এই চরিত্রে পরমব্রত ভালো। সে তার বান্ধবী মোতিকে চুমু খাওয়া শেখায়। দৃশ্যটি দর্শনীয়। পরে মোতিকে নিয়ে কুমুদ কোথায় যায় জানা যায় না। শশীর বাবার চরিত্রে শান্তিলাল যথাযথ।
সব মিলিয়ে সুমনের ‘পুতুলনাচের ইতিকথা’ একখণ্ড গ্রামীণ জীবনকে তুলে ধরার চেষ্টা করেছে। এটাই হয়তো তিনি চেয়েছিলেন। তবে ছবিটি বেশ গতানুগতিক এবং বাংলা সিনেমাকে নতুন কিছু দেয় না।
Edited and Published by Prabuddha Neogi
আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেল ফলো করুন





